Maulan Jalaluddin rumi 5 Bangla
পর্বটির শুরুতে পর্বটির নামকরণ করা হয় “অস্থিরতা”। অর্থাৎ আমরা এই পর্বে হুদাভেন্দিগার এর অস্থিরতামূলক কিছু দেখতে পাবো।
পর্বের শুরুতে আমরা দেখতে পাই, হুদাভেন্দিগার হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে দৌড়ে সিরাজের বাড়িতে চলে গেলেন। এবং তাকে জিজ্ঞেস করছেন? কি হয়েছিল? ওই পাগল সেখানে ছিল, তাই না? পরিপূর্ণ বিস্তারিত বলো? ওই বাঁশির সুর? তুমি আমাকে সব বল? এবং খুব অস্থিরতা নিয়ে হুদাভেন্দিগার এসব বলছিল সিরাজের সাথে। সিরাজ হুদাভেন্দিগার কে সবকিছু খুলে বলে। সিরাজের কথায় তার মনে পড়লো, সে তার মত দেখতে কাউকে তার সাথে দেখেছে। এবং সে তাকে বলছিল শব্দগুলো খুঁজে বের করো। এবং প্রয়োজনে ছাত্র হতে। প্রয়োজনে মোহাম্মদের আদলে পরিণত হতে।
এরপর হুদাভেন্দিগার তার দরগাহে আসলেন, তিনি দরগাহে এসে দেখলেন, ওই পাগলটি দরগাহে রয়েছে। হুদাভেন্দিগার তাকে দেখে, তাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো, তুমি কোথায় ছিলে? আমি চিন্তিত ছিলাম? তখন পাগলটা বললোঃ আমি পাহাড়ে ছিলাম, আমি আমার পশুদের খাওয়াচ্ছিলাম, কিন্তু হঠাৎ সাপ আক্রমণ করে, সাপ আমার পশুর পিছু নেইনি। আমার পশু পালিয়ে গিয়েছে।
সাপটা আমার পিছু নিয়েছিল। আমি দৌড়ে চলে এসেছি। এবং পাগলটা হঠাৎ বলতে লাগলো, দরজার বাহিরে সাপ আছে, দরজার বাহিরে সাপ আছে, তারা এসে গিয়েছে, তারা আমার কিছু নয় আপনার পিছু নিয়েছে, হুদাভেন্দিগার। তার কথা শুনে হুদাভেন্দিগার একটু ভয়ে ভয়ে গিয়ে দরজা খুললেন, দরজা খোলার সাথে সাথে দেখলেন অনেক সাপ তার দরগাহের দরজার বাহিরে। তিনি ভয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন, কিছুক্ষণ পর দরজায় অনেক আওয়াজ হচ্ছিল, তখন তিনি দরজা খুলে দেখেন, ওই সেই লোক, যে কিনা প্রাসাদে সুলতানের সামনে হুদাভেন্দিগার কে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে অপমানিত করতে চেয়েছিল।
এদিকে বায়জু নয়ান জোরালো আক্রমণের ফলে দুর্গ কিছুটা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে, কিন্তু দুর্গের কমান্ডার দূর্গটি তার হাতে তুলে দিবেনা বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, কিন্তু দূভুনি যে কিনা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সে ওই বারুদগুলো দেওয়ালে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিলে দেওয়াল উড়ে গিয়ে ভেঙে যায়। যার মাধ্যমে দুর্গে প্রবেশ একদম সহজ হয়ে যায়। এবং মঙ্গল সৈন্যরা দুর্গে প্রবেশ করে দুর্গটির ভিতর সবাইকে হত্যা করে।
এবং দুর্গের কমান্ডার কে বন্দি করা হয়, তাকে বায়জু নয়ান হত্যা করার আগে জিজ্ঞেস করে, তোমার শেষ ইচ্ছা কি? দুর্গের কমান্ডার বলে, আমার শেষ ইচ্ছা আমি নামাজ পড়তে চাই! তখন বায়জু নয়ান ও পুরা মঙ্গল বাহিনীর সামনে দূর্গের কমান্ডার নামাজ আদায় করেন। এবং এরপর দুর্গের কমান্ডার কে হত্যা করা হয়। এবং দুর্গের কমান্ডার শাহাদাতের উচ্চ মর্যাদা লাভ করেন।
এদিকে ওমর ৫ হাজার সৈন্য নিয়ে কোনিয়া থেকে বের হয়। বের হওয়ার সময় পুরো শহরবাসী তাদের সংবর্ধনা দেয়, এবং ওমর হুদাভেন্দিগার এর থেকে দোয়া নেন।
সেখান থেকে আসার সময় কিছু ব্যবসায়ী মাওলানা জালালুদ্দিন রুমিকে প্রশ্ন করেন, আমরা একটি বিষয় নিয়ে দ্বিধায় আছি? মঙ্গলরা আমাদের থেকে বিপুল পরিমাণে জুতা কিনতে চাই? আমরা কি তাদেরকে বিক্রি করতে পারব? তখন মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি বলেনঃ এর দ্বারা তাদেরকে শক্তিশালী করা হবে, এটি বিক্রি না করাই উত্তম। তবে আপনারা ব্যবসায়ী, বিক্রি না করলে চলবেন কিভাবে? তাই আমি আপনাদেরকে পরামর্শ দিবো আপনারা জুতো না বানিয়ে, তার চামড়া এরতুগ্রুল গাজীর কাছে বিক্রি করতে পারেন। কারণ তার ঘোড়া ব্যবসা রয়েছে, তার চামড়ার প্রয়োজন রয়েছে।
সেই পাগলকে এক দরবেশ দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছে, এক লোক দরবেশ কে জিজ্ঞেস করলে? এই পাগলকে দৌড়ানোর কারণ কি? তখন তিনি বলেনঃ সে গোসল করতে চেয়েছিল, আমি তাকে জিনিসপত্র দিলাম, কিন্তু সে এখন ভেঙে গিয়েছে। যখন পাগলটি আটকা পড়ে তখন সে বলেঃ আমার এখন গোসল করতে মন চাচ্ছে না, আমার ঠান্ডা লাগছে তাই আমি এখন গোসল করব না।
এবং সে বলে হুদাভেন্দিগার লোকটা কোথায়? তাকে ডাকো। তখন হুদাভেন্দিগার এর ছেলে বলেঃ আমি তার ছেলে আমাকে বলো। তখন পাগলটি বলেঃ তোমাকে কেন? তাকেই ডাকো, সে আমার শীর্ষ, আমি তার পথপ্রদর্শক। মূলত এই পাগল অনেক বড় জ্ঞানী ছিল। more
রাতে খাবার খেতে বসে জালাল উদ্দিন রুমি এর ছেলে যখন পাগলের কথাটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল, হুদাভেন্দিগার বললেন হয়তোবা আসলেই সে আমার পথ প্রদর্শক। জালাল উদ্দিন রুমি কথা বলতে বলতে হঠাৎ স্বপ্নে হারিয়ে যায় এবং সে দেখতে থাকে তার সামনে একটি খুব স্থাপিত হয়েছে, এবং সে দেখতে পায় তার বাবার লাইব্রেরীতে পানি দিয়ে ভরে গিয়েছে।
সেখানে একটা লোক এসেছে, জালালুদ্দিন রুমি সেই লোকের পিছু নিলে, বাহিরে গিয়ে দেখতে পারে সেই লোকটি তার বাবা। তারা বাবা তাকে একটি দরবেশ দলের মাঝখানে প্রবেশ করিয়ে দেয়। more
এই ঘটনাগুলোর মাধ্যমে মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি পর্ব ৩ শেষ হয়। আমরা সামনের পর্বে দেখতে পাবো, ওমর তার বাহিনী নিয়ে গিয়ে কি মঙ্গলদের হারাতে পারবে? মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি অস্থিরতা থেকে বের হতে পারবেন